সিদ্ধিরগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মাডারের দায় স্বীকার করেছেন আব্বাস মিয়া। তিনি তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে শ্যালিকা ও দুই মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন। ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিল্টন হোসেন আদালতে ওই জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়। এর আগেরদিন বৃহস্পতিবার সকালে হত্যাকান্ডের পর বিকেলেই সিদ্ধিরগঞ্জের পাওয়ার হাউজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবির একটি টিম। পরে বৃহস্পতিবার রাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ট্র্রিপল মার্ডারের ঘটনায় নিহত নাজনিনের স্বামী সুমন বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় সুমনের ভায়রা আব্বাস (৩২) কে একমাত্র আসামী করা হয়। মামলা নং ৪৯।
মামলায় বাদী সুমন উল্লেখ করেন, তার স্ত্রীর বড় বোন ইয়াসমিনের সাথে স্বামী আব্বাসের দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। বিভিন্ন সময় এই কলহের কারণে তার স্ত্রী নাসরিন বড় বোন ইয়াসমিনের পক্ষ নিয়ে কথা বলায় আব্বাসের সাথে মনোমালিন্য হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে আব্বাস ও তার স্ত্রী ইয়াসমিনের ঝগড়া হয়ে। পরে সুমনের শ্যালক তথা নাসরিনের ভাই হাসান বড় বোনের স্বামী আব্বাসকে মারধর করে। পরদিন সকালে হাসান তার বড় বোন ইয়াসমিন ও তার মেয়ে সুমাইয়া সহ সুমনের বাসায় বোন নাসরিনের কাছে চলে আসে। ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টায় সুমন কর্মস্থল সিদ্ধিরগঞ্জস্থ জোনাকী পেট্রোল পাম্প থেকে মিজমিজি সিআইখোলাস্থ আনোয়ার মালিকানাধীন ৬তলা ভবনের ভাড়া বাসায় এসে স্ত্রী ও সন্তানদের গলাকাটা রক্তাক্ত লাশ এবং তার স্ত্রীর বড় বোনের প্রতিবন্ধী মেয়ে সুমাইয়াকে রক্তাক্ত আহত অবস্থায় খাটের উপর জীবিত দেখতে পায়। পরে ঘটনাটি তার শ্যালক হাসানকে ফোন করে জানালে কর্মস্থল থেকে তার শ্যালক হাসান ও স্ত্রীর বড় বোন বাসায় আসে এবং হাসান জরুরী ভিত্তিতে সুমাইয়াকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আজিজুল হক জানান, আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে আব্বাস ক্ষোভের পূঞ্জীভূত থেকেই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটিয়েছে জানান। বৃহস্পতিবার সকালে একটি ধারালো ছোড়া নিয়ে ফ্ল্যাটে যায়। প্রথমে সুমনের স্ত্রী নাজমিন (২৮) ও তার দুই কন্যা সন্তান নুসরাত (৮) ও সায়মার (২) গলা কেটে হত্যা করে। এসময় চিৎকার চেচামেচি করলে তার নিজের মেয়ে প্রতিবন্ধি সুমাইয়াকেও (১৫) ছোড়া দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে।